সিলেটে সুরমা নদীর উপর নির্মিত কাজিরবাজার ব্রিজ সিলেটবাসীর কাছে সেলফি ব্রিজ নামেই পরিচিত। বিনোদনের পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি ও বয়সের লোকজন ভিড় জমাতেন এই ব্রিজে। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলতো সেলফি আর আড্ডা। ইট-পাথরের এই নগরীতে মানুষ কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতেন এই ব্রিজে।

তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ও ব্রিজের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে গত জানুয়ারি মাস থেকে কাজিরবাজার ব্রিজে চটপটি-ফুচকা দোকানদের তুলে দিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। ফলে এখানে আর ভিড় জমে না সেলফি ও আড্ডাবাজদের।

সেই শূন্যতা সামান্য হলেও যেন পূরণ করেছে সম্প্রতি নান্দনিক রূপ পাওয়া সিলেটের বন্দর-চৌহাট্টা সড়কটি।

দেশের আধ্যাত্মিক নগরী খ্যাত সিলেটের প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার যানজটমুক্ত রাখতে চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার-বন্দরবাজর সড়কে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে রিকশা, ভ্যান ও লেগুনা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশ। ফলে এক মাস থেকে ওই এলাকায় যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরে আসে।

বন্দরবাজার থেকে চৌহাট্টা মোড় পর্যন্ত সড়কটিতে সম্প্রতি বিভাজক (ডিভাইডার) স্থাপন করে দ্বিমুখী যান চলাচলের ব্যবস্থা করে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। সড়ক বিভাজকে কারুকাজ করা গ্রিল স্থাপন করেছে সিসিক। বিভাজকে লাগানো হয়েছে হরেক রকম ফুলের গাছে। এতে নান্দনিক রূপ পেয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক। পুরো এলাকার বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ করে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

বন্দর-চৌহাট্টা সড়কে পাশঘেষে আছে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধসহ সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এ ছাড়া নগরীর প্রধান প্রধান বিপণিবিতানও জিন্দাবাজারসহ এ এলাকার আশপাশে অবস্থিত।

সবকিছু মিলিয়ে এ সড়কে নগরবাসী ও বিনোদনপ্রিয় লোকজন পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে পছন্দ করেন। সন্ধ্যার আঁধার ঘনিয়ে এলেই জ্বলে ওঠে সোডিয়াম বাতি। নিয়ন আলোর ঝলকানিতে এ সড়কে এখন রাত-দিন তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়েসি মানুষের সেলফি তোলার হিড়িক। এ সড়কে অবস্থান করে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভও দিচ্ছেন। সেলফি তুলে পোস্ট করছেন ফেসবুকে।

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ সড়কে হাঁটতে থাকা ব্যাংক কর্মকর্তা ইসমত আরা জাহান এ প্রতিবেদককে বলেন, এ সড়কে এখন প্রাণভরে নি:শ্বাস নেয়া যায়। হাঁটা যায় স্বাচ্ছন্দে। যা আগে সম্ভব হতো না।

এ সড়কে সেলফি তুলা সুমন নামের এক কলেজছাত্র জানান, এ সড়কে আসলে অন্যরকম এক অনুভূতি জাগে। তাই বন্ধুদের নিয়ে এসেছি এখানে ঘুরতে। পাশাপাশি কয়েকটি সেফলি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছি।


সূত্র: সিলেটভিউ২৪ডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *