করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আজ থেকে দেশজুড়ে সীমিত পরিসরে ‘লকডাউন’ শুরু হয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ রেখে সীমিত পরিসরে অফিস-আদালত চালু থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে অফিসগামী মানুষ। রাস্তার স্থানে স্থানে অফিসগামী যাত্রীরা ভিড় করেছেন। কিন্তু কোথাও বাস নেই, মিনিবাস নেই। অটোরিকশাও কম। যে রিকশাগুলো চলছে সেগুলোর ভাড়াও বেশি। অনেকে বেশি ভাড়ায় রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

সোমবার (২৮ জুন) সকাল ৮ টা থেকে রাজধানীর মিরপুর, খিলক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকায় আফিসগামী মানুষের ভোগান্তির এমন চিত্র দেখা গেছে।

সুমাইয়া আক্তার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে যাবেন আগারগাঁও। দীর্ঘ এক ঘণ্টা অপেক্ষার পরে কোনো পরিবহন না পেয়ে রিকশায় যাত্রা শুরু করেন আগারগাঁও উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন, ‘সীমিত পরিসে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়েছে। অফিস খোলা আছে। অফিস তো যেতেই হবে। চাকরি বাঁচাতে হবে। চাকরি চলে গেলে পরিবার নিয়ে বিপদে পড়ে যাব। যত কষ্ট পোহাতে হয় আমাদের মত সাধারণ মানুষের। ৮০ টাকার ভাড়া রিকশা চালক নিচ্ছে ১৩০ টাকা। যে যেভাবে পারছে ভাড়া চাইছে, বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে। কে দেখবে এইসব অসংগতি আর সমস্যা?’

খিলক্ষেতে বসস্ট্যান্ডে অপেক্ষারত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বাবুল বলেন, অফিস খোলা রাখা হয়েছে। রাস্তায় যানবাহন নেই। আমার অফিস মহাখালী এখন কীভাবে যাবো বুঝতে পারছি না। এভাবে কি সাধারণ মানুষকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করা যায়? মানুষ যদি নিজে থেকে সচেতন না হয়।

একই চিত্র রাজধানীর শাহবাগ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, কারওয়ান বাজার, নীলক্ষেত, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, আসাদগেটসহ বিভিন্ন স্থানে। গণপরিবহনের অভাবে অনেকে হেঁটেই অফিসে রওনা হয়েছেন।

মতিঝিল যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে ৮টায় আগারগাঁওয়ে অপেক্ষা করছিলেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বললেন, রিকশায় ভাড়া চাইছে ৪০০ টাকা। অটোরিকশাও কম। তাই হেঁটেই রওনা দেবো। তিনি জানান, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করেন।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পণ্যবাহী যান চলাচল করছে রাজধানী ঢাকায়। সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেকে বাধ্য হয়ে এসব যানবাহনেও উঠেছেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঢাকার কাছের জেলাগুলো থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে অনেকে পণ্যবাহী ট্রাক ও পিকআপে উঠছেন।

এর আগে, রবিবার (২৭ জুন)  প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে বলা হয়, সারাদেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ব্যতীত সব গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়মিত টহলের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

সূত্রঃ কালের কন্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *