সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম বিয়ানীবাজারের পীরের চক এলাকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং নিহত দুলাল আহমদের মাসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন। তাদের আশ্বস্ত করে পুলিশ সুপার বলেন, অনাকাঙ্খিত এ মৃত্যুর সাথে যারাই জড়িত থাকবে, সে যদি পুলিশের লোকও হয়ে থাকে ছাড় দেয়া হবে না। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে পুলিশের তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য গ্রহণ করতে সময় প্রয়োজন হলে তাদের সর্বোচ্চ ১০ দিনের সময় দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ মে) সকালে তিনি তিলপাড়া ইউনিয়নের পীরের চক এলাকা পরিদর্শনকালে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলেন। এ সময় দুলাল আহমদ নিহত ঘটনায় পীরের চক বাজারে গ্রামবাসীর আয়োজিত সমাবেশে যোগ দেন সিলেটের পুলিশ সুপার। এ সমাবেশে গ্রামবাসীর পক্ষে গ্রামের দুই প্রতিনিধি গত শনিবার বিকালে ঘটে যাওয়া পুরো চিত্র পুলিশ সুপারের সামনে তুলে ধরেন এবং দুলাল হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবি জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসপি মিডিয়া) লুৎফুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) জাকির হোসাইন, তিলপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, শিক্ষাবিদ মজির উদ্দিন আনছার ও সাবেক চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন প্রমুখ।

পীরের চক বাজারে গ্রামবাসীর সমাবেশ শেষে এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম বলেন, এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয়টি তদন্ত শেষ না পর্যন্ত বলা যাবে না। ঘটনার তদন্তে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। ওয়ারেন্ট তামিল করতে গিয়ে তারা অতিরঞ্জিত কিছু করেছে কিনা এ বিষয়টিতে গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। তিনি বলেন, অনাকাঙ্খিত এ ঘটনার পুরো বিষয়টি জানতে আমরা তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, তারা আগামীকাল বুধবার থেকে কাজ শুরু করবেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন সম্পন্ন করবেন।

পীরের চক গ্রামীবাসীর সমাবেশে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, পুলিশের উপর আমাদের আস্থা আছে। চার পুলিশের জন্য সমগ্র পুলিশ প্রশাসনকে দায়ি না করে আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে অতিউৎসাহি সিএনজি (অটোরিক্সা) ড্রাইভারকেও (চালক) খোঁজের বের করা উচিত।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান বলেন, ‘পুলিশ আমাদের আমরা পুলিশের। একে অপরের পুরিপুরক। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশের। এ বিষয়ে দায়িত্ব¡শীলদের আরো সতর্ক থাকতে হবে। একই সাথে যেসব পুলিশ সদস্যরা আসামী ধরতে এসে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্ম দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার ২৮ মে বিয়ানীবাজার উপজেলার পীরেরচক এলাকায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী দুলাল আহমদের গ্রেপ্তার করতে ধাওয়া করে পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে দুলাল হাওরের পানিতে ঝাঁপ দিলে পুলিশ নৌকায় তার পিছু নেয়। পরদিন রোববার হাওরে তার লাশ ভেসে ওঠে। এলাকাবাসী ও স্বজনদের অভিযোগ পুলিশে লগির আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *