ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সুরমা ও লোভা নদীর তীব্র স্রোতের কারণে বিভিন্ন এলাকায় সুরমার ডাইক ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে নতুন করে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার  উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব, লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম, দিঘীরপাড় পূর্ব, বড়চতুল, সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার রাস্তা-ঘাট ও বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। শত শত বাড়ি-ঘরে হাটু সমান পানি থেকে কোমর পানি রয়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে কানাইঘাট সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৬৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকেল ৩টার দিকে তা কমে ১৪৩ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল। সুরমা নদীর পানি ডাইকের উপর দিয়ে উপচে পড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। তাছাড়া কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করায় পুরো উপজেলা ভয়াবহ আকার রূপ ধারণ করেছে।

গত বুধবার রাত ৯টার পর থেকে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় গভীর রাতে ডালাইচর, গৌরিপুর, কুওরঘড়ি, উত্তর লক্ষীপ্রসাদ, দক্ষিণ লক্ষীপ্রসাদ, বোভারহাওর সুরমা ভাইকের বিভিন্ন স্থান সহ কানাইঘাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সুরমা ডাইকে বড় ভাঙন সহ নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা ভেঙে পানি দ্রুত বেগে লোকালয়ে প্রবেশ শুরু করে। গভীর রাতে পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদে বাড়ি-ঘর থেকে সরিয়ে আনার জন্য মসজিদে মসজিদে মাইকিং করা হয়।

অপরদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানের জন্য প্রচারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, পানি বৃদ্ধির কারনে কানাইঘাট-দরবস্ত সড়ক, গাজী বোরহান উদ্দিন সড়ক, কানাইঘাট-সুরইঘাট সড়ক ও কানাইঘাট-শাহবাগ সড়কের নিচু এলাকা দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় সিলেটের সাথে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে।

সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও ডাইক ভেঙে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *