‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টে গাওয়া হলো নতুন দিনের গান। আর সেই আয়োজনে মধ্যমণি সুরসম্রাট রাহাত ফতেহ আলী খান। মাতালেন ঢাকার শ্রোতাদের।
বিনা পারিশ্রমিকে গান গেয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সহায়তায় তহবিল সংগ্রহে পাশে থাকলেন। গান শোনাল দেশের প্রথম সারির ব্যান্ড আর্টসেল। চিরকুটও মুগ্ধতা ছড়াল গানে। সব মিলিয়ে অন্যরকম এক সুরের রাত।
অন্যদিকে অভ্যুত্থানে আহতরা বাংলার মাটিতে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবি তোলেন। ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে এই কনসার্টের আয়োজন করেছে স্পিরিটস অব জুলাই প্ল্যাটফর্ম।
রাহাত ফতেহ আলী খান রাত সাড়ে ৯টার কাছাকাছি সময়ে মঞ্চে আসেন পুরো মাঠভর্তি দর্শকের তুমুল করতালির অভিবাদন নিয়ে। এসেই বাংলায় আমি তোমাদের ভালোবাসি বলে তার জনপ্রিয় গান ‘তুনা জানে আসপাস হে খোদা’ পরিবেশন করেন। চারদিক থেকে হাজার হাজার মানুষ মোবাইল ক্যামেরায় সেটি ধারণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অনেকে আবার শিল্পীর সঙ্গে একসঙ্গে কণ্ঠ মেলান। এরপর একে একে গেয়ে শোনান ‘সাজড়া তেরে বিনা, ওরে প্রিয়াসহ তার বিখ্যাত সব গান।
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সহায়তার জন্য এ কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। কনসার্ট থেকে আয় হওয়া সব অর্থ শহিদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার নিয়ে কাজ করা কল্যাণমূলক সংস্থা ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এ দেওয়া হবে।
সন্ধ্যার পর মঞ্চে ওঠেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। এ সময় তিনি শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়ে স্লোগান দেন। তার সঙ্গে গলা মেলান কনসার্টে উপস্থিত হাজারো মানুষ।
সারজিস আলম মঞ্চে উঠে স্লোগান দেন-ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই, রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়, আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ।
সারজিস আলম বলেন, খুনি হাসিনার গুলিতে আমাদের ভাইয়েরা নিজেদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়ে আমাদেরকে ফ্যাসিবাদের কবল থেকে রক্ষা করেছেন। যার কারণে তাদের কাছে আমাদের অনেক ঋন।
এ সময় আরও ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানে হাত হারানো গাজী আতিক, শহিদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও শহিদ আহনাফ ফাইয়াজের মা।
স্নিগ্ধ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার লক্ষ্যেই এই ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন কখনো নগদ টাকা গ্রহণ করে না। বিকাশ, রকেট, নগদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের তহবিল গঠন করা হয়ে থাকে।
গাজী আতিকুল ইসলাম বলেন, লুটপাট, গুম, হত্যা, চাঁদাবাজি কী করেননি ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য স্বৈরাচার হাসিনা সবকিছু করেছেন।
খোকন চন্দ্র বর্মণ বলেন, আরেক দেশে বসে থেকে খুনি হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে মানুষ হত্যার বিচার করতে হবে।
শহিদ আহনাফ ফাইয়াজের মা বর্তমান সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমাদের আশপাশে স্বৈরাচারের যেসব দোসর ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। খুনি হাসিনাকে ফাঁসি না দিলে আমার আহনাফ ফাইয়াজের মতো কোনো শহিদের আত্মা শান্তি পাবে না।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.