সিলেটের কানাইঘাট ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পেট্রোলেঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে ওই নারী স্বামী হোসেন আহমদ চৌধুরী আক্তার (৪৫) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে উপজেলার সাতবাঁক ইউনিয়নের চরিপাড়া গ্রামে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে, অন্তঃসত্ত্বা সাবানা বেগম (২০)কে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত কন্যা সন্তান প্রসব করেন। সাবানা বেগমের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানা যায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কান্দলা গ্রামের হোসেন আহমদ চৌধুরী আক্তারের সাথে বছরখানেক পূর্বে একই গ্রামের সাবানা বেগমের বিয়ে হয়।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, গত শনিবার রাত ৮টার দিকে ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাবানা বেগমকে আনতে শশুড় বাড়ি যান স্বামী আক্তার। কিন্তু সাবানা বেগম অসুস্থ থাকায় শাশুড়ি মেয়েকে নিজের কাছে রাখতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আক্তার শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। কিছুক্ষণ পরে তিনি স্থানীয় কান্দলা নয়াবাজার থেকে টাইগারের বোতলে পেট্রোল কিনে শশুর বাড়িতে গিয়ে আচমকা বিছানায় শুয়ে থাকা সাবানা বেগমের উপরে পেট্রোল ছিটিয়ে গ্যাস লাইট দিয়ে আগুন ধরিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এরপর সাবানার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে সাবানার শরীরের আগুন নেভান। তবে ততক্ষণে তার শরীরের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে যায়। দ্রুত সাবানাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে রবিবার সকালে সাবানার মৃত সন্তান প্রসব করেন।
বর্তমানে সাবানা বেগমকে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, স্ত্রীকে পেট্রোল ছিটিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় তার স্বামী আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঘটনা জানার পর শনিবার রাতে তিনি সাবানা বেগমকে দেখতে ওসমানী হাসপাতালে যান। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার মৃত কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানোর পর নবজাতকের দাফন করা হয়।
সাবানা বেগমের বাবা আব্দুল জব্বার জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে আক্তার যখন তার বাড়িতে যায় তখন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। বাড়িতে গিয়ে সাবানা বেগমের শরীরের পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যান আক্তার। বর্তমানে তার মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.