ফ্রান্সের প্যারিস থেকে স্পেনের বার্সেলোনা, ইতালির রোম কিংবা পর্তুগালের লিসবন সহ গোটা ইউরোপ যখন অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতার আন্দোলনে কাঁপছে, এমতাবস্থায় গ্রীসের রাজধানী এথেন্সও আজ কেঁপে উঠেছিলো বৈধতার দাবীতে।

শুক্রবার (২৬ জুন) কেরফা সংগঠন দ্বারা আয়োজিত অভিবাসীদের দাবী আদায়ের আন্দোলনে জড়ো হয়ে রেকর্ড গড়েছে গ্রীসের বৈধ ও অবৈধ অভিবাসীরা।

কেরফার সাথে, স্থানীয় গ্রীক জনগন, বিভিন্ন দেশের কমিউনিটি ও রিফুজি সংগঠন এবং বিশ্ব মিডিয়ার সমন্বয়ে প্রায় ১০,০০০ অভিবাসীদের সাথে নিয়ে রেকর্ডময় এই আন্দোলনে গ্রীসের রাজধানী এথেন্সের, সিনটাগমা এলাকা উত্তাল ছিলো।

গ্রীস ইতিহাসে অভিবাসীদের সুযোগ-সুবিধার দাবী আদায়ে রাজপথে,বিভিন্ন দেশের হাজারো অভিবাসীদের সমন্বয় আর কখনো দেখা যায়নি।এই আন্দোলনে ১০,০০০ এর বেশি অভিবাসীরা এক হয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে গ্রীক সরকারের কাছে বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন।

অবৈধ অভিবাসীদের বিনাশর্তে বৈধকরণ, পুলিশ হয়রানি বন্ধ করন, বর্ণবাদ বৈষম্য বন্ধ করণ, অবৈধ অভিবাসীদের পলিটিক্যাল এসাইলাম গ্রহণ সহ বিবিধ দাবীতে বাংলাদেশ কমিউনিটি, পাকিস্তান কমিউনিটি, আফ্রিকান কমিউনিটি, আলবেনিয়ান কমিউনিটি, গ্রীসের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন একমত পোষণ করেছিলো।

সরজমিনে দেখা যায়, অভিবাসী ও শরনার্থীদের উচ্ছেদ,বাসস্থান ব্যবস্থা, গ্রীক সরকারের সাম্প্রতিক প্রশ্নবিদ্ধ আইন, এস্যাইলাম আইন শিথিলকরণ, সীমান্ত সমাধান এবং বৈধতার এই আন্দোলনে স্থানীয় গ্রীক জনগণ এবং বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের ঢল নেমেছিলো। গ্রীক সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে আন্দোলন শুরু হয়ে রাত ৯টায় শেষ হয়েছিলো।

কেরফা সহ বিভিন্ন রিফুজি সংগঠন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই আন্দোলনে বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের দেখা গেলেও, এক পর্যায়ে বাংলাদেশি অভিবাসীদের বন্যা বয়ে গেছে। হাজারো বাংলাদেশিকে গন-মিছিল করতে দেখা যায়।

তারা সহজশর্তে বৈধকরণ এবং তাদেরকে রাষ্ট্রের সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান ও বিবিধ সমস্যা সমাধানের জন্য গ্রীক সরকার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আবেদন করেন।

গ্রীসের ইতিহাসের এরকম আন্দোলন খুব বেশি দেখা না গেলেও সাম্প্রতিক গ্রীক সরকারের শরনার্থী ও অভিবাসীদের বিপক্ষে প্রশ্নবিদ্ধ আইনকরণ, এস্যাইলাম কঠোরতা, বৈধতার কঠোরতা, সীমান্ত বন্ধ এবং শরনার্থীদের শিবির থেকে উচ্ছেদকরণের ফলে প্রতিনিয়ত আন্দোলন হচ্ছে এবং আগামীতে বেশ কয়েকটি আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে।

বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভালো ফলাফল না আসা পর্যন্ত,তারা গ্রীক সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে, তাদের সকল সুযোগ-সুবিধা এবং বৈধতার ব্যাপারে আকুল আবেদন অব্যাহত রাখবে।
ফয়ছল আহমদ সাগর, গ্রীস থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *